শুভ “মাতৃ দিবস”, এই কথাটি মাত্র কয়েক দিন আগেই শোনা গেছে সবার মুখে মুখে, সমাজিক মাধ্যমে মায়েদের প্রতি শুভেচ্ছায় ভরে গিয়েছে। কিন্ত এই দুর্ভাগা দেশে আমরা দেশকে মা বলি আবার সেই দেশের মায়েদের আজও পায়ের তলায় দাবিয়ে রাখি। মাতৃ দিবস উদযাপনের কয়েক দিন পরেই এক মায়ের লাঞ্ছিত হওয়ার একটি ভয়ংকর ঘটনা সামনে এলো নদীয়ার শান্তিপুরে৷ শান্তিপুরের মাতাল গড় এলাকায় লাহিড়ী পুকুরের পাশে বসবাস করা ৯৫ বছরের এক বৃদ্ধা তার মেয়ের কাছেই থাকেন৷ বৃদ্ধা এক সময় বেশ কিছু সম্পত্তির মালিক ছিলেন৷ সম্প্রতি ওই বৃদ্ধা তাঁর সব সম্পত্তি, বসত বাড়ী বিক্রি করে যা টাকা পেয়েছিলেন সবটাই এক ছেলে ও তিন মেয়ের মধ্যে ভাগ করে দেন। সম্বলহীনা মাকে ঘাড় থেকে নামাতে এক মেয়ের বাড়ী রেখে যায় অন্য ছেলে মেয়েরা৷ সেই মেয়ে প্রতিদিন মা-কে মারধোর, গালিগালাজ তো করেই, উপরী পাওনা হিসেবে খেতেও ঠিকমত না দিয়ে তাকে ঘর থেকে টেনে হিচড়ে বের করে দেয় বলে অভিযোগ। এমনকি তালা দিয়ে ঘরে আটকে দেওয়ার মতো অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা৷ পাশাপাশি অসহায় মাকে বার্ধক্য ভাতার টাকাটাও তুলে দিতে হয় মেয়ের হাতে৷ এই মর্মান্তিক ঘটনা এলাকার কিছু ছেলে মেয়ে মিলে নদীয়ার শান্তিপূরের সমাজকর্মী মোহর দে বিশ্বাস, সঞ্জিত কাষ্ঠ, দীপান্বিতা, শুভঙ্কর ও গৌরী রায় নন্দীকে জানান। খবর পাওয়ার পর তাঁরা দল বেঁধে যান সেই বৃদ্ধার কাছে। সেখানে এলাকার মানুষের সাথে কথা বলে শান্তিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ সুমন দাসকে মৌখিকভাবে ঘটনাটি জানানো হয়েছে বলে জানান ওই সমাজ কর্মীরা। বৃদ্ধার মেয়ে খেতে দেবে না এবং থাকতে দেবেনা বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন বলেও জানান তারা। সমাজকর্মীরা শান্তিপুরের আর এক সংস্থা যারা নিয়মিত এলাকার ভবঘুরে ও সহায় সম্বলহীন মানুষদের খাওয়ান, সেই নবজাগরন সংস্থার সম্পাদক রনা প্রসাদ ভট্টাচার্যকে বিষয়টি জানালে তারা ঐ বৃদ্ধাকে খাওয়ানোর দায়িত্ব নেন৷ বর্তমানে নবজাগরন সংস্থা ওই বৃদ্ধাকে দিনে দু বেলা খাবার দিয়ে আসেন বলেও জানা গেছে৷ যদিও মারধোর, খেতে না দেওয়া, বার্ধক্য ভাতা নিয়ে নেওয়া কিংবা ঘরে তালা দিয়ে দেওয়ার অভিযোগ কখনো অস্বীকার করছেন, আবার কখনো নিজেকে মানসিক রুগী বলে তাকে বিরক্ত না করার কথা বলছেন সেই বৃদ্ধা৷