অল্প সময়ের মধ্যেই দেশকে করোনামুক্ত করে সারা বিশ্বের প্রশংসা কুড়িয়েছে নিউজিল্যান্ড। প্রায় ৪৯ লক্ষ্য জনসংখ্যার এই দেশে তিন মাসেরও বেশি সময়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে মাত্র ১১৫৪ জন। সেখানে করোনায় মৃত্যু হয়েছে কেবল ২২ জনের। আর এই সাফল্যের মধ্যেই ৮ জুন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডার্ন নিজের দেশকে করোনামুক্ত বলে ঘোষণা করেন। সংক্রমিতদের সুস্থ করার পাশাপাশি করোনা সংক্রমণকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছে এই দেশ। তবে কোন কৌশলে তা সম্ভব হল? জেনে নিন।
করোনা ভাইরাসের সাথে মোকাবিলা করতে দ্রুত লকডাউন শুরু হয় নিউজিল্যান্ডে। ২৪ মার্চ সে দেশের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডার্ন বাইরের দেশ আগতদের ১৪ দিনের সেল্ফ আইসোলেশনে থাকাকে বাধ্যতামূলক করেন। সেই সময় দেশে কেবল ৬ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ সনাক্ত করা যায় এবং তখনও মৃত্যু হয়নি কারোর। এরপর দেশে প্রায় ১০০ জন করোনা আক্রান্ত হলে, ২৫ মার্চ সীমান্ত বন্ধ করে পুরোপুরি লকডাউন শুরু হয় নিউজিল্যান্ডে। প্রথম থেকেই কড়াকড়ি আরোপ করা হয় সেখানে। ওষুধের দোকান, মুদির দোকান, হাসপাতাল ও গ্যাস স্টেশন ছাড়া সেখানে প্রায় সবকিছুই বন্ধ রাখা হয় দীর্ঘদিন। এমনকি দেশ করোনামুক্ত হলেও সেই দেশে বন্ধ রয়েছে সীমান্ত।
করোনা মোকাবিলা নিউজিল্যান্ডের সাফল্যের অন্যতম কারণ ছিল পর্যাপ্ত পরীক্ষা। সংক্রমণ মারাত্মক আকার না নিলেও সে দেশে দিনে প্রায় ৮ হাজার মানুষের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। মোট ২ লক্ষ ৯৫ হাজার মানুষের করোনা পরীক্ষা হয়েছে সেই দেশে, যেখানে জনসংখ্যা ৪৯ লক্ষ। এছাড়াও উপসর্গ থাকা বা আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের পরীক্ষা করা হয় এবং তাদের আইসোলেশনে বা কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়।
নিউজিল্যান্ডের সাফল্যের অন্যতম কারণ হল পরিকল্পিত ভাবে এবং একই সাথে কঠোরভাবে সরকারের লকডাউন কার্যকর। লকডাউন ঘোষণার পরই প্রত্যেকের কাছে একটি বার্তা পাঠায় সেখানকার সরকার। যার মূল বক্তব্য ছিল, করোনা প্রতিরোধে জনসাধারণের কাছে সাহায্য চাওয়া। এছাড়াও পর্যাপ্ত পরীক্ষা ও তাদের আইসোলেশনে রাখার মাধ্যমেই করোনা মোকাবিলায় সফল হয় নিউজিল্যান্ড।
তবে এর পাশাপাশি দ্বীপরাষ্ট্র হওয়ায় সীমান্ত বন্ধ রাখতে অনেকটাই সফল হয়েছে নিউজিল্যান্ড। যার জেরে নতুন করে সংক্রমণ এড়ানো গেছে সেই দেশে। ফলে করোনা প্রাদুর্ভাবের প্রায় ১০১ দিনের মাথায় দেশকে করোনামুক্ত বলে ঘোষণা করেছেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডার্ন।